• তাজা খবর

    সাথী শপথের আলোকে আমাদের জীবন

     সাথী শপথের আলোকে আমাদের জীবন pdf


    সাথী শপথের আলোকে আমাদের জীবন



    বাইয়াত শব্দের মূল অর্থঃ বিক্রয়।

    গৌন অর্থঃ চুক্তিশপথঅঙ্গীকারশ্রদ্ধা প্রদর্শনআনুগত্য স্বীকার।


    ইসলামী সংগঠনে আনুগত্যের গুরুত্বঃ

    • আনুগত্য করা ফরয (নিসা-৫৯)
    • আনুগত্যহীনতা আমলকে বরবাদ করে দেয় (মুহাম্মাদ-৩৩)
    • আনুগত্য সৎ কাজেঅসৎ কাজে নয় (মায়েদা-২)
    • পছন্দ না হলেও আনুগত্য ফরয (বুখারী ও মুসলিম)
    • যথাসাধ্য আনুগত্য করা ফরয (বুখারী ও মুসলিম)
    • আনুগত্যহীনতার পরিণাম ভয়াবহ (জাহিলিয়াতের মৃত্যু)
    • হাবশী গোলামও যদি আমীর হয়তাহলে তারও আনুগত্য করে যেতে হবে (বুখারী)
    • আমীরের আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য পূর্ণ হয় (বুখারী ও মুসলিম)


    লক্ষ্য হাসিলের উদ্দেশ্যে জীবন বিসর্জনের যে শপথ নেয়া হয় তা অগ্নি-শপথ বা রক্ত-শপথ বা দৃপ্ত-শপথ ইত্যাদি নামে পরিচিত। ইসলামে একমাত্র আল্লাহর নাম নিয়েই শপথ নেয়া হয়আগুনরক্ত বা কারো মাথা ছুয়ে নয়।



    বাইয়াত কার কাছেঃ

    • সাহাবায়ে কেরাম রাসূল (সাঃ)-এর নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
    • রাসূল (সাঃ)-এর ইন্তেকালের পর সাহাবায়ে কেরাম আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর নিকট বাইয়াত হয়েছেন।
    • মুসলমানদের সামষ্টিক জীবনের পরিচালনার দায়িত্ব যার উপর ন্যস্ত হয়েছে তাঁর নিকট বাইয়াত হওয়ার এ পদ্ধতি ইসলামের ইতিহাসে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত।


    আল কুরআনে বাইয়াতঃ

    • ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের জান ও মাল বেহেশতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন।’’ (সূরা আততাওবা-১১১) আল্লাহর কাছে জান-মাল বিক্রয় করা মানে যাবতীয় মানসিকদৈহিক ও বস্তুগত শক্তি-সামর্থ্য এবং সময়সম্পদ ও শ্রম আল্লাহর আনুগত্যের অধীনে ব্যবহার করার ওয়াদায় আবদ্ধ হওয়া।..
    • সূরা ফাতহে (১০ ও ১৮ আয়াতে) বাইয়াত মানে রাসুল (সাঃ)-এর নির্দেশে জীবন দেবার শপথ করা। সূরা মুমতাহিনাতে (১২ আয়াতে) আল্লাহর ও রাসূলের অবাধ্য না হওয়ার ওয়াদাই বাইয়াতের উদ্দেশ্য।


    দৃষ্টাস্তঃ

    • এক সাহাবীর মা মৃত্যু শয্যায় থাকা সত্ত্বেও তিনি যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে যথা সময়ে উপস্থিত হলেন। তিনি রাসূল (সাঃ)-কে মায়ের অবস্থাটি জানালেন। ওযর পেশ করে না যাওয়ার উদ্দেশ্য অবশ্যই ছিল না। কিন্তু অবস্থা জেনে রাসূল (সাঃ) তাকে মায়ের সেবায় পাঠিয়ে দিলেন। ঐ সাহাবী মাকে এ অবস্থায় ফেলে যাওয়া সম্ভব নয় বলে নিজেই যুদ্ধে না যাবার সিদ্ধান্ত নেননি। সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার রাসূলের হাতে তিনি তুলে দিয়েছেন বাইয়াতের মাধ্যমে। যদি তিনি যুদ্ধে যাবার জন্য তৈরি হয়ে রাসূলের কাছে উপস্থিত না হতেন এবং নিজেই না যাবার সিদ্ধান্ত নিতেন তাহলে তা বাইয়াতের খেলাফ হতো। রাসূল (সাঃ) অবস্থা জেনে তাঁকে মায়ের খেদমত করার অনুমতি দেয়ার ফলে তিনি যুদ্ধে না যেয়েও এর সওয়াব পেয়ে গেলেন। তদুপরি মায়ের সেবার সওয়াবও পেলেন।..
    • রাসূলের নির্দেশে তাবুকের যুদ্ধে যেতে রাযী হয়েও বিলম্ব করে ফেলার কারণে ৩ জন সাহাবীকে ৫০ দিন পর্যন্ত একঘরে (বা সামাজিভাবে বয়কট) করে রাখা হয়েছিল। বাইয়াতের মর্যাদা রক্ষার গুরুত্ব কতটুকু তা এসব ঘটনা থেকে সুস্পষ্ট।
    এক হাদীসে রাসূল (সাঃ)-এর পাঁচটি নির্দেশ হলো
    • ১.সংগঠনবদ্ধ হওয়া
    • ২.নেতার কথা শুনা
    • ৩.আনুগত্য করা
    • ৪.হিজরত করা এবং
    • ৫.জিহাদ করা।


    সফরের মত একটি সাধারণ বিষয়েও ৩ জন হলে একজনকে আমীর বানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

    - ‘যে ব্যক্তি জামায়াত পরিত্যাগ করল সে ইসলামের শিকল তার গলা থেকে ছুড়ে ফেলল।’ (আহমাদতিরমিযী)
    আসল বাইয়াত তো আল্লাহর কাছেই করা হয়। এ বাইয়াত ঈমানেরই দাবি। এ বাইয়াত প্রত্যাহার করা মানে ঈমান ত্যাগ করা।
    কোন জামায়াতের কাছে বাইয়াত হবার পর যদি এর চেয়েও উন্নতমানের দ্বীনি জামায়াতের সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে নিম্নমানের জামায়াতের কাছ থেকে বাইয়াত প্রত্যাহার করে ঐ উন্নতমানের জামায়াতের কাছে বাইয়াত হওয়াই উচিত।
    ইসলামী আন্দোলনকে কঠিন মনে করে বা কোন ব্যক্তিগত দুর্বলতার কারণে বাইয়াত প্রত্যাহার করে জামায়াত ত্যাগ করার ব্যাপারে হাদীসে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘জামায়াতের সাথে আল্লাহর রহমত থাকে। যে বিচ্ছিন্ন হয় সে দোযখেই নিক্ষিপ্ত হয়’’ (তিরমিযী)। ‘‘যে ব্যক্তি বাইয়াতের বন্ধন ছাড়াই মারা গেল সে জাহিলিয়াতের মৃত্যু বরণ করল’’ (মুসলিম)।
    বাইয়াত (শপথ) করা ও এর হক আদায় করা
    • জান-মালের কুরবানীতে পিছপা না হওয়া
    • সৎ কাজের নির্দেশ পালন করা
    • চূড়ান্ত শপথের প্রস্তুতি গ্রহণ করা


    আচরণঃ



    - পর্দা রক্ষা করাঃ

    • বাজনাসহ গান
    • টিভিতে যা তা দেখা
    • সিডিডিশমোবাইলইন্টারনেট এর অপপ্রয়োগ


    জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতাঃ চিন্তার বিষয়-

    • সবাই ভাল বলে কিন্তু পরিবার খারাপ বলে কেন?
    • এমন কোথাও যাই কি যা আর কেউ জানে না?
    • অর্থনৈতিক হিসেব আপ টু ডেট থাকা উচিত।
    • নিজে রিপোর্ট রাখে কিন্তু বাড়িতে রাখে না- তাহলে স্বচ্ছতা থাকে না।
    • হলে জামায়াতে নামায পড়ে কিন্তু বাড়িতে পড়ে না- তাহলে স্বচ্ছতা নষ্ট হয়।


    কৌশল অবলম্বন ঃ

    • শুদ্ধ উচ্চারণঃ Local tone বা Local Language (সার্বিক পরিসরে) বর্জন করা ভাল। Standard বাংলা বলা উচিত।
    • Body Movement : হাত পকেটে নয়বুকে নয়। জিহ্বা বের হবে না। মুদ্রাদোষ বর্জন।
    • প্রত্যেক সকালে লিখিতভাবে আপনার দিনের কাজগুলোর পরিকল্পনা করুন এবং কাজ সম্পাদন হয়ে গেলে উক্ত কাজটি তালিকা থেকে কেটে দিন।


    ইসলামী আন্দোলনকারীদের কিছু রোগঃ

    • ব্যক্তিগত সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করা
    • পদে নির্বাচিত হওয়ার আকাক্সক্ষা করা
    • নিজেকে বড় দ্বীনদার ভাবা বা ‘আমি যথেষ্ট বুঝি’ মনে করা
    • নিজের কাজ ও যোগ্যতার প্রশংসা নিজে করা
    • বুযুর্গ’-এর দৃষ্টান্ত দেখিয়ে কাজে ঢিলেমী করা

    কোন মন্তব্য নেই