• তাজা খবর

    সত্যের সাক্ষ্য - সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী (র:)

     সত্যের সাক্ষ্য pdf note


    সত্যের সাক্ষ্য 
    লেখক: সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী (র:) 
    অনুবাদক: মাওলানা আব্দুর রহিম

    বই পরিচিতিঃ |
    - সত্যের সাক্ষ্য বইটি মুলত ১৯৪৬ সালের ৩০শে ডিসেম্বরপাকিস্থানের শিয়ালকোটের মুরাদপুর নামক স্থানে সাধারণ সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তিৃতার একাংশ। 
    বইটি প্রথমত দুই ভাগে ভাগ কার হয়েছেঃ-  
    ১. ভূমিকা 
    ২. মূল আলোচনা

    ভূমিকাঃ 
    - মুসলিম জাতির দায়িত্ব ও কর্তব্য ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক ভাবে। 
    - দায়িত্ব পালনের উপায় 
    মুল আলোচনা আবার দুই ভাগে বিবক্তঃ
    ১. আমাদের তথা মুসলিম জাতির দায়িত্ব ও কর্তব্য 
    ২. দাওয়াত প্রতিষ্ঠা করণ 
    - আল্লাহর প্রশংসা / শুকরিয়া 
    - দুরূদ 
    - সম্মেলনের উদ্দেশ্যে দাওয়াত   

    আমাদের দাওয়াত দুধরনের মানুষের নিকটঃ
    - বংশগত যারা মুসলমান 
    - বংশগত যারা অমুসলমান। 
    - আল্লাহর বাণীঃ ওয়া কাযালিকা জাআলনাকুম উম্মাতাঁও ওয়াসাতালিতাকুনু শুহাদাআ আলান্নাস। ওয়া কুনুর রাসূ-লা আলাইকুম শাহিদা। (বাকারাহ-১৪৩) 

    মুসলমানের দায়িত্বঃ 
    - মুসলমানের দায়িত্ব শুধু নিজের মাঝে ইসলামকে সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়। 
    - মুসলমান স্বতন্ত্র জাতি। 
    - সত্যের সাক্ষ্য হয়ে না দাড়ালে চরম লাঞ্চনা ভোগ করতে হবে। 

    সত্যের সাক্ষ্য কি? 
    আল্লাহর পক্ষ থেকে নবীদের মাধ্যমে যে সত্যের সাক্ষ্য এসেছে তার সরল সোজা পথ সম্বন্ধে দুনিয়ার সামনে তাকে তুলে ধরা। 

    সাক্ষ্যদানের বিষয়ঃ 
    - দ্বীনের সত্যতার সাক্ষ্য
    - যথার্থ সত্যতার সাক্ষ্য
    - নবী আগমনের উদ্দেশ্য। 

    সাক্ষ্যদানের গুরুত্বঃ
    - সাক্ষ্যদানের গুরুত্ব অপরিসীম । ইহাকে ভিত্তি করে আল্লাহ তাআলা মানুষকে হিসাব নিকাশ এবং পুরস্কার বা শাস্তি দানের ব্যবস্থা করেছেন। 
    - আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও মেহেরবানতিনি মানুষকে এমন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাস করবেন না যা সে অবগত নয় এবং তার জন্য তাকে শাস্তির যোগ্য করবেন না। 
    - আর আল্লাহ যুগে যুগে নবী রাসুলদের মাধ্যমে মানবকে জানিয়ে দিয়েছেন যে কোন জিনিস আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় এবং কোন জিনিস অপছন্দনীয় অর্থাৎ কোনটি গ্রহনীয় ও কোনটি বর্জনীয়। 

    মোট কথাঃ- 
    - দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে জবাব দিতে হবে। 
    - এজন্য সতর্ক কারী প্রেরণ। 
    চুড়ান্ত প্রচেষ্টাঃ
    - আল্লাহ নবীদের দ্বারা একাজ করান। 
    - মানুষের নিকট জবাবদীহির অনুভূতি। 

    জবাবদিহীঃ নবীদের অনুসারীরা একজাত নবীদের অবর্তমানে উম্মতের উপর নবীদের দায়িত্ব (সত্য সাক্ষ্যদানের) অর্পিত  দায়িত্ব পালনের অবহেলা করলে জবাবদিহী করতে হবে নিজে মানুষের জন্য।  

    সাক্ষ্য দানের পদ্ধতিঃ 
    - মৌখিক সাক্ষ্য 
    - বাস্তব সাক্ষ্য 

    মৌখিক সাক্ষ্য দানঃ-  
    মৌখিক সাক্ষ্য হচেছ নবীর মাধ্যমে আমাদের নিকট যে সত্য এসে পৌছেছে বক্তৃতা ও লিখিত মাধ্যমে দুনিয়ার সামনে তাকে তুলে ধরা ।  আল্লাহর দ্বীন সম্পর্কে যুক্তি প্রমানের দ্বারা সত্যতা প্রমান করে সকল বিপরীত মতাদর্শ গুলোর অসত্যতা প্রমান করতে। অর্থাৎ মানুষকে বুঝাবার ও তাদের মনে প্রবেশ করার সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টা চালানো।  সমগ্র মুসলিম জাতি যে পর্যন্তÍ মানুষকে হেদায়াতের পথ দেখাবার জন্য নবীদের ন্যায় চিন্তা ভাবনা করবেসে পর্যন্ত এ মৌখিক সাক্ষ্য দানের দায়িত্ব পুরোপুরি পালন হবেনা। সকল দিক ও বিভাগে এই মহান সত্যের শিক্ষাকে পেশ করা। বিপরীত মতাদর্শের ত্রুটি নির্দেশ করা। 
    সত্যের সাক্ষ্যকে সকল কাজের কেন্দ্রীয় লক্ষ্যে পরিনত করা এবং সত্যের বিপরীত সাক্ষ্যদান কারীর কোন আওয়াজকে বরদাস্ত করা যাবেনা। বাস্তব সাক্ষ্যঃ- বাস্তব জীবনে সত্যের প্রচার প্রতিফলন। জীবন্ত মুসলিম হতে হবে অনুসরনের ক্ষেত্রে সত্যের প্রতিমুর্তি। মুসলিম সমাজের নমুনা তৈরী। 

    মৌখিক সাক্ষ্য বিশ্লেষণঃ 
    মুসলমানের বর্তমান সাধারণ সাক্ষ্য ইসলামের প্রতিকূলে। ভূ-স্বামীরা আদালতশিক্ষাসাহিত্যপ্রচার মাধ্যমব্যবসাবানিজ্যনেতাজনগনÑ সাক্ষ্য দিচ্ছে যে তাদের মুখে দুনিয়াবী কাজ-কারবার এর চর্চা ব্যতীত অন্য কোন আলোচ্য বিষয় নেইতারা এমন কোন ধর্মের সাথে সম্পর্কিত নয় যারা আলোচনার কিছু সময় ব্যয় করতে পারে। অনুরূপভাবে আমাদের সাহিত্যিকগণ সাক্ষ্য দান করছেন যেইংল্যান্ডআমেরিকাফ্রান্স ও রাশিয়ার ধর্ম বিমুখ নাস্তিক সাহিত্যিকদের যা আদর্শ তাদের আদর্শও তাই এবং মুসলিম সাহিত্যিক হিসেবে তাদের সাহিত্যের কোন স্বতন্ত্র মর্মবাণী নেই। 

    বাস্তব সাক্ষ্য বিশ্লেষণঃ- কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া মৌখিক সাক্ষ্যর তুলনায় এর অবস্থা আরো শোচনীয়। জাহিলিয়াতই প্রাধান্য পাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমিতি রাজনৈতিক। লরেন্স ব্রাউনের উক্তি- অধুনা লরেন্স ব্রাউন নামক জনৈক ইংরেজ লেখক দি প্রসপেক্টস অব ইসলাম’ (The Prospects of Islam) নামক গ্রন্থে  বিদ্রুপ করে বলেছেনঃ- “ আমরা যখন ভারতে ইসলামের দেওয়ানী ও ফৌজদারী আইনকে সেকেলে ও অকেজো মনে করে রহিত করে দিয়ে কেবল মুসলমানদের পার্সোনাল-ল’ হিসেবে রেখে দিয়েছিলামতখন মুসলমানদের কাছে তা বড় অপছন্দনীয় বলে মনে হচ্ছিল। কারণ এর ফলে তাদের অবস্থা এককালীন ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম যিম্মীদের অনুরূপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তুু এখন আমাদের নীতি শুধু ভারতীয় মুসলমানদেরই মনঃপূত হয়নিবরং মুসলিম রাষ্ট্রগুলোও আজ আমাদের অনুসৃত নীতিরই অনুসরণ করছে। তুরস্ক ও আলবেনিয়া তো বিবাহতালাক ও উত্তরাধিকার আইন পর্যন্ত আমাদের মানদন্ড অনুযায়ী সংশোধন করে নিয়েছে। এ থেকে এ কথাই প্রমাণিত হচ্ছে যে, ‘আইনে উৎস হচ্ছে আল্লাহর ইচ্ছা মাত্র’- মুসলমানদের এ ধারণাটি নিছক একটি পবিত্র কাহিনী ছাড়া আর কিছুই ছিল না।” 

    সত্য গোপনের শাস্তিঃ- 
    - ইহকালীন শাস্তি 
    - পরকালীন শাস্তি 
    মুসলমানদের সমস্যাঃ- 
    আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা না করা। সৎ লোক না থাকা। আল্লাহর পথে প্রকৃত দায়ী না থাকা। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ কারী না থাকা।
             
    সমস্যার সমাধানঃ- 
    - আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা কারী তৈরি করা। 
    - সৎ লোক তৈরী করা। আল্লাহর পথে ডাকার জন্য যোগ্য দায়ী থাকা। 
    - সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান কারী সংগঠন তৈরি করা। 
    - কাজের তিনটি পথঃ 
    ১. যদি ভালো মনে করেন আমাদের সাথে শামিল হয়ে যান। 
    ২. না হয় অন্য কোন ভালো ইসলামী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হোন। 
    ৩. এতেও না হলে-খাঁটি ইসলামী পন্থায় একটি সুসংহত জামায়াত গঠন করুন। * 
         - বিভিন্ন দ্বীনি সংগঠন 
         - আমাদের দাবী 
         - অভিযোগের জবাব 

    নতুন ফিরকা চার ভাগে বিভক্তঃ 
    ১. দ্বীনের সাথে সম্পর্কহীন কোন কিছুকে দ্বীনের মধ্যে শামিল করে--- মাপকাঠি হিসেবে গ্রহণ করা। 
    ২. কোন মাসাআলা কে কুরআন সুন্নাহর চাইতে গুরুত্ব দেয়া। 
    ৩. ইজতেহাদী বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা। 
    ৪. কোন ব্যক্তিকে নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা। 
     ইসলামের প্রকৃতিঃ 
    - যাকাত আদায়ের অধিকার 
    - বায়তুল মাল 

    আমাদের উদ্দেশ্যঃ- জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামকে মেনে নিয়ে মুসলমান হিসাবে দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা ও সত্যের সাক্ষ্যদানই্  আমাদের জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য।

    কোন মন্তব্য নেই