• তাজা খবর

    ইলমুত তাজবীদ বা তাজবীদ শিক্ষা

     

    ইলমুত তাজবীদ


     সংজ্ঞাঃ তাজবীদ অর্থ সুন্দর ও শুদ্ধ করা। পরিভাষায়যে নিয়ম-কানুন পাঠ করলে কুরআনুল কারীম সুন্দর ও শুদ্ধরুপে পড়া যায় তাকে তাজবীদ বলে। 

     প্রয়োজনীয়তাঃ তাজবীদ অনুযায়ী আল কুরআন পড়া ফরজ। 

     মাখরাজঃ আরবী হরফ সমূহ উচ্চারণের স্থানকে মাখরাজ বলে। মাখরাজ ১৭টি। 

     লাহানঃ কুরআন শরীফ ভুল পড়াকে লাহান বলে। 
    লাহান দুই প্রকারঃ  
    ১. লাহনে জলীঃ অর্থ বড় ভুল। কুরআনের এক অক্ষরকে অন্য অক্ষর পড়াকে লাহনে জলী বলে। ইহা কবীরা গুনাহ। 
    ২. লাহনে খফীঃ অর্থ ছোট ভুল। এক হরকতকে অন্য হরকত পড়াকে লাহনে খফী বলে। ইহা সগীরা গুনাহ তবে কোন কোন সময় কবীরা গুনাহও হয়ে যেতে পারে। 
     ওয়াজিব গুন্নাহঃ   এবং   বর্ণের উপর তাশদীদ (   ّ  ) থাকলে বাংলা চন্দ্র বিন্দুরমত গুন্নাহ করে পড়াকে ওয়াজিব গুন্নাহ বলে। ওয়াজিব গুন্নাহ না করলে কবীরা গুনাহ হয়। যেমনঃ  ﺇﻦ   ﺍﻠﻠﻪ 
     নুন সাকিনঃ যে নুনের উপর যযম থাকে তাকে নুন সাকিন বলে।  
     তানবীনঃ দুই যবরদুই যেরদুই পেশ কে তানবীন বলে। 

     নুন সাকিন ও তানবীন পড়ার নিয়ম চারটিঃ 
    ১. ইযহারঃ নুন সাকিন ও তানবীনের পরে ইজহারের ছয় হরফের (        ) কোন একটি আসলে ঐ নুন সাকিন ও তানবীনকে গুন্নাহ ব্যতিত স্পষ্ট করে পড়তে হয়। যেমনঃ  ﻤﻦ ﺃﺠﻞ
    ২. ইক্বলাবঃ নুন সাকিন ও তানবীনের পরে ইক্বলাবের হরফ (   ) আসলে তখন ঐ নুন সাকিন ও তানবীনকে ( )   দ্বারা পরিবর্তণ করে পড়তে হয়। যেমনঃ ﻤﻦ   ﺒﻌﺪ 
    ৩. ইদগামঃ নুন সাকিন ও তানবীনকে ইদগামের বর্ণের সহিত মিলিয়ে পড়তে হয়। 
     ইদগাম দুই প্রকার। যথাঃ  
    ১. ইদগামে বা গুন্নাহঃ নুন সাকিন ও তানবীনের পরে ইদগামে বা গুন্নাহর চার হরফের (      ) কোন একটি আসলে গুন্নাহ সহকারে মিলিয়ে পড়তে হয়। যেমনঃ ﻣﻥ  ﻳﺷﺎﺀ 
    ২. ইদগামে বেলা গুন্নাহঃ ইদগামে  বেলা গুন্নাহর দুই হরফের (    ) যে কোন একটি আসলে গুন্নাহ ব্যতিত মিলিয়ে পড়তে হয়। যেমনঃ ﻣﻥ  ﺭﺑﻬﻡ 
    ৪. ইখফাঃ নুন সাকিন ও তানবীনের পরে ইখফার ১৫ হরফের যে কোন একটি আসলে উহাকে গুন্নাহ করে পড়তে হয়। ইখফার হরফঃ (                  
     মীম সাকিনঃ যে মীমের (   ) উপর যযম (   ّ  ) থাকে তাকে মীম সাকিন বলে। 
    ইহা পড়ার নিয়ম তিনটিঃ 
    ১. ইখফাঃ মীম সাকিনের পর যদি   হরফ থাকে তখন উহাকে গুন্নাহ করে পড়তে হয়। 
    . ইদগামঃ মীম সাকিনের পর যদি মীম থাকে তবে উভয় মীমকে গুন্নাহ সহ পড়তে হয়। 
    ৩. ইযহারঃ   ও   ব্যতীত বাকী ২৭ বর্ণের যে কোন একটি বর্ণ যদি মীম সাকিনের পর থাকে তবে তাকে গুন্নাহ ব্যতীত স্পষ্ট করে পড়তে হয়। 

      ﺃﻠﻠﻪ শব্দ পড়ার নিয়মঃ যদি  ﺃﻠﻠﻪ শব্দের   এর পূর্ব বর্ণে পেশ বা যবর থাকে তবে ঐ   কে মোটা এবং যদি   এর পূর্ব বর্ণে যের থাকে তবে উহাকে চিকন করে পড়তে হয়। যেমনঃ  ﺒﺴﻢ ﺍﻠﻠﻪ  ﺃﻠﻠﻬﻢ

     মাদ্দঃ লম্বা স্বরে দীর্ঘ করে পড়াকে মাদ্দ বলে। মাদ্দের হরফ তিনটিঃ      
     মাদ্দ ছয় প্রকারঃ 
    ১. মাদ্দে তাবায়ী 
    ২. মাদ্দে বদল 
    ৩. মাদ্দে লীন 
    ৪. মাদ্দে মুত্তাসিল 
    ৫. মাদ্দে মুনফাসিল   
    ৬. মাদ্দে আরজী। 

    মাদ্দ অনেক প্রকার। নিম্মে সাত প্রকার মদ্দের বিবরণ দেয়া হল: 
    ১) মদ্দে আছলী 
    ২) মদ্দে মুত্তাছিল
    ৩) মনে মুনফাছিল 
    ৪) মনে আরেযী 
    ৫) মনে লীন
    ৬) মনে বদল
    ৭) মনে লাযেম।   

    ১) মদ্দে আছলীঃ মদ্দে হরফের পর হামযা অথবা ছাকিন না আসলে তাকে মদ্দে আছলী বলে। ইহাকে এক আলিফ লম্বা করে পড়তে হয়। যেমন-    نﻮ حيها ।  
    ২) মদ্দে মুত্তাছিলঃ মদের হরফের পরে একই শব্দে হামযা আসিলে তাহাকে মদ্দে মুত্তাছিল বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করে পড়িতে হয়ে। যেমন-    ﺍولئك ।  
    ৩) মদ্দে মুনফাছিলঃ মদের হরফের পরের শব্দে হামযা আসিলে তাহাকে মদ্দে মুনফাছিল বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করে পড়িতে হয়ে। যেমন-    ﺍنا ﺍعطيناك ।  
    ৪)  মদ্দে আরেযীঃ মদের হরফের পরে ছাকিনে আরযী আসিলে তাহাকে মদ্দে আরেযী বলে। ইহাকে তিন আলিফ লম্বা করে পড়িতে হয়ে। যেমন-   تعﻠمﻮن। 
    ৫) মদ্দে লীনঃ (  و ওয়াও) ছাকিন  ي (ইয়া) ছাকিন ডাইনে  َ  যবর আসিলে তাহাকে হরফে লীন বলে। হরফে লীনের পরে ছাকিনে আরযী আসিলে তাহাকে মদ্দে লীন বলে। ইহাকে দুই আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়যেমন -   بيت-خﻮف سيد ।  
    ৬) মদ্দে বদলঃ মদ্দের হরফের পূবে হামযা আসিলে তাহাকে মদ্দে বদল বলে। ইহাকে এক আলিফ লম্বা করে পড়িতে হয়। যেমন-    ء - ء - ء ।   - ﺍيمانا

    ৭) মদ্দে লাযেমঃ হরফে মদের পরে ছাকিনে আছলী আসিলে তাহাকে মদ্দে লাযেম বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়। যেমন -   دﺍبة ।  

    নোটঃ  যে ছাকিন সব সময় এক অবস্থায় থাকে তাহাকে ছাকিনে আছলী বলে। ইহা দুই প্রকারঃ   
    (১) আশদীদ যুক্ত ছাকিন
    (২) যযম যুক্ত ছাকিন

    মদ্দে লাযেমের প্রকারভেদঃ মদ্দে লাযেম ৪ প্রকার যথাঃ  
    ১।  মদ্দে লাযেম কালমী মুসাক্কাল: যদি শব্দের মধ্যে তাশদীদ যুক্ত সাকিন আসে তবে তাহাকে মদ্দে লাযেম কালবী মুসাক্কাল বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়ে। যেমন-  تامرونى 
    ২) মদ্দে লাযেম কালমী মুখাফ্ফাফ: যদি শব্দের মধ্যে যযমযুক্ত ছাকিন আসে তবে তাহাকে মদ্দে লাযেম কালবী মুখাফফাফ বলে। ইহা চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়। যেমন-   ﺍلئن 
    ৩। মদ্দে লাযেম হরফী মুসাক্কাল: যদি হরফের মধ্যে তাশদীদযুক্ত ছাকিন আসে তবে তাহাকে মদ্দে লাযেম হরফী মুসাক্কাল বলে। ইহাকে চার আলিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়। যেমন-   ﺍلم 
    ৪। মদ্দে লাযেম হরফী মুখাফ্ফাফ:  যদি হরফের মধ্যে যযমযুক্ত ছাকিন আসে তবে তাহাকে মদ্দে লাযেম হরফী মুখাফফাফ বলে। ইহাকে চার অালিফ লম্বা করিয়া পড়িতে হয়। যেমন -    ص ।

    কোন মন্তব্য নেই