• তাজা খবর

    আপনার স্বপ্ন বা পরিকল্পনা কার সাথে শেয়ার করবেন?

     স্বপ্ন মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন।

    স্বপ্ন প্রত্যেক মানুষের থাকে। ছোটবড় স্বপ্ন নিয়ে মানুষ পথ চলে।
    আপনারও জীবনে নিশ্চয় কতগুলো স্বপ্ন আছে। জীবন যাপনের স্বপ্ন, নিজের বা মানুষের কল্যাণের স্বপ্ন, উন্নত জীবন যাপনের স্বপ্ন। এগুলো আমরা কখনো ইচ্ছায় আবার কখনো বা মনের অজান্তে দেখি। স্বপ্ন দেখতে নিজের উপায় উপকরণ বা সামর্থ্যের দিকে আমরা কখনো তাকাই না।


    আমরা জীবনের বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য পরিস্থিতির মুখোমুখি হই। পরিস্থিতিগুলো হয় আমদের তাকদীরে লেখা না হয় আমাদের কর্মের কামাই। যাই হোক, সে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমরা পরিকল্পনা করি। নতুনভাবে সামনে আগানোর স্বপ্ন দেখি।

    আমাদের পরিকল্পনাগুলো সব সময় দুনিয়ামুখি হয়। আখেরাত বা পরকাল নিয়ে খুব বেশি পরিকল্পনা বা জান্নাতের স্বপ্ন আমরা দেখার চেষ্টা খুব কম ই করে থাকি।

    পার্থিব বস্তু লাভ আমাদের স্বপ্নের বেশির ভাগ অংশ জুড়ে থাকে। স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা আল্লাহর সাহায্য চাই ঠিক ই কিন্তু সে আলোকে কাজ করতে পারি না। স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে আমরা হর হামেশা আল্লাহর বিধান বা বিধিনিষেদের বাহিরে চলে যাই। ভাবি, আগে এটা সাকসেস হই পরে তাওবা বা দান খয়রাত করে নেবো! 
    যাই হোক, আমার টপিক "কাকে আপনার লালিত স্বপ্ন শেয়ার করবেন? "

    স্বপ্ন বা পরিকল্পনার কিছু বিষয় বলে রাখি-

    ১. আল্লাহর উপর ভরসা:-
    আপনি যদি সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাসী হন তাহলে অবশ্যই আপনাকে আপনার তাকদীরের উপর বিশ্বাসকে মজবুত করে নিতে হবে। আপনার পরিকল্পনা শুরুর আগে অবশ্যই আল্লাহর সাহায্য চেয়ে নিতে হবে। তাহলে আপনার পরিকল্পনায় বরকত আশা করতে পারেন। কারণ আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পাই না। আমরা জীবন নিয়ে ভাবি এক রকম আর হয় অন্য রকম। তাই প্রথমে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া এবং পরে আপনার উপায় উপকরণ বা সামর্থ্যের উপর ভরসা রাখবেন।  আপনার চিন্তা বা পরিকল্পনায় মানবজাতির কল্যাণ নিহিত থাকলে আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই সফল মানুষদের কাতারে দাড় করাবেন।

    ২. পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট অধ্যয়ন:-
    আপনি আপনার জীবনকে সুন্দর করতে বা কোন কিছু শুরু করতে যে পরিকল্পনা বা স্বপ্ন দেখেন সে সংশ্লিষ্ট কিছু জ্ঞান অর্জন জরুরী। তাই সে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বই, আর্টিকেল পড়ুন বা ডকুমেন্টারি দেখুন। আপনার মত পরিকল্পনা নিয়ে কারা সফল হয়েছে আর কারা বিফল হয়েছে তা জানুন। তারা কিভাবে সফল হয়েছে সে কারণগুলো যেভাবে জানবেন ঠিক তেমনি যারা বিফল হয়েছে তারা কেন ব্যর্থ হয়েছে সেগুলোও জানা আপনার জন্য জরুরী। প্রচুর অধ্যয়ন আপনাকে আপনার পরিকল্পনা তৈরি এবং বাস্তবায়নে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

    ৩. তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ:- 
    প্রচুর স্টাডির সাথে সাথে আপনাকে সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নোট করতে হবে যা আপনার পরবর্তীতে কাজে লাগবে। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ডাটাবেজ কালেক্ট করুন। বর্তমান দুনিয়ায় এর প্রয়োজনীয়তা কি তা যাচাই করুন। এটা কি শুধু আপনার কল্যাণে আসবে নাকি মানবজাতিরও কল্যাণের পথ খুলে দেবে সেটা চিন্তায় রাখুন। অন্যের পরিকল্পনা থেকে আপনার চিন্তা কতটা ইউনিক করা যায় সেখানে নিয়ে প্রচুর ভাবুন। অন্যকে নকল করে ভাল কিছু চিন্তা করা যায় না। সেখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে আপনার পরিকল্পনাকে আরো সমৃদ্ধ করুন।

    ৪. পরামর্শ করা:- 
    বিভিন্নজনের সাথে আপনার পরামর্শ করা জরুরী। হয়তো আপনি ভাবছেন এক দৃষ্টিকোণ থেকে কিন্তু অন্যরা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে পারে। পারস্পরিক আলোচনা অনেক ফলপ্রসূ হয়। অন্যের চিন্তা নিজের ঝুড়িতে নিয়ে আসা যায়।

    ৫. কাগজে কলমে পরিকল্পনা নেয়া:-
    আপনার চিন্তা কখনো মাথায় জমা রাখবেন না, যখন যে চিন্তা মাথায় আসবে সাথে সাথে নোট করে নিন। পরিকল্পনার একটি ছক আঁকুন।
    কি করতে চান? 
    কিভাবে করতে চান?
    কি নিয়ে কাজ করবেন?
    কার জন্য করবেন? 
    যার জন্য করবেন সে কে?
    তার চাহিদা কি?
    এ চিন্তা করে কে সফল হয়েছে বা বিফল?
    সফলতার কারণ কি?
    ব্যর্থতার পথগুলো কি কি?  

    ৬. কার সাথে পরিকল্পনা শেয়ার করবেন না?
    নিজের জীবনের ভালো কিছু আমরা অন্যের সাথে শেয়ার করতে ভালে লাগে। কিন্তু মাঝে মাঝে আমরা ভুল জায়গায় তা করে ফেলি। এ ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। যে অন্যের চিন্তাকে মুল্যায়ন করতে জানে না, যে অন্যের সফলতা সহ্য করতে পারে না, যে নিজেকেই সব সময় সেরা মনে করে, যে অন্যের ভালো কিছু হউক তা চায় না, সর্বোপরি যে আপনার কল্যাণ চায় না সে ধরনের কাউকে ভুলেও কখনো আপনার স্বপ্ন বা পরিকল্পনা শেয়ার করবেন না। আপনার চিন্তা চেতনার ব্যাপারে যার জ্ঞান নেই তাকেও কখনো তা শেয়ার করবেন না, সে আপনাকে বিভ্রান্ত করে ফেলতে পারে।  যদি করেন তাহলে আপনি সামনে আগানো তো দূরের কথা বরং চিন্তা চেতনায় অনেক পেছনে চলে যাবেন। যা আপনার পথ চলায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। তাই এ ধরনের লোকদের থেকে যতটুকু সম্ভব দুরত্ব বজায় রেখে চলা উত্তম।

    ৭. কার সাথে শেয়ার করবেন?
    এ ধরনের মানুষ সংখ্যায় খুব কম পাওয়া যায়। যারা অন্যেকে মুল্যায়ন করতে জানে। তবুও আপনাকে আপনার চারপাশে এমন শুভাকাংখী খুজে বের করতে হবে, যার কাছে আপনি আপনার চিন্তা, স্বপ্ন বা পরিকল্পনা শেয়ার করতে পারবেন। যে আপনার চিন্তাকে গুরুত্ব দেবে। যার কিছু প্রেরণা আপনাকে সামনে এগিয়ে নিতে সাহস যোগাবে। তাদেরকে খুজে বের করুন। তার সাথে পরামর্শ করুন। আপনার চিন্তা পরিকল্পনা বা স্বপ্ন শেয়ার করুন। কখনো অজ্ঞ, নেগেটিভ সেন্সের মানুষের সাথে কোন চিন্তা শেয়ার করবেন না। সে আপনাকে মিসগাইড করবে। তাই যে আপনার কল্যাণ কামনা করে, যে আপনাকে মুল্যায়ন করে, যার কাছে আপনি মনের কথা বলে অন্তরে প্রশান্তি লাভ অনুভব করেন  এমন কারো সাথে আপনার স্বপ্ন শেয়ার করুন। ঠকবেন না বরং নতুন উদ্যেমে সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন।

    আপনার জীবনের পথে আপনাকেই একা পাড়ি দিতে হবে। যেহেতু আমরা সমাজে বাস করি, কারো না কারো সাথে আমাদের ক্ষানিকটা পথ চলতে হয়। সেক্ষেত্রে যেন সে মানুষগুলো আমরা কল্যাণকামী হয়ে সে দিকে খেয়াল রাখা দরকার।

    আপনার স্বপ্নগুলো বেঁচে থাকুক অনন্তকাল।
    আপনার স্বপ্নগুলো আপনাকে নিয়ে যাক সাফল্যের চুড়ান্ত উচ্চতায়।
    আপনার স্বপ্নগুলো পথ দেখাক মানবতার কল্যাণের।

    সেই কামনা রইলো ।

    ( Special Thanks For full reading )

    Khulajanala.com

    কোন মন্তব্য নেই